Voter Card 2022 (ভোটার কার্ড) কী, Application Process, Important Documents, Status Checking Process বা কি জানুন বিস্তারিত Bengali তে !

Voter ID Card  | Voter Card in Bengali | Voter List | Voter Card Status Check | Eligibility for Voter Card | Voter Card Benefits | ভোটার কার্ড 

ভোটার কার্ড কী (What is Voter Card)?

ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক পরিচয় পত্র হলো Voter Identity Card। Voter ID Card একাধারে ভারতীয় নাগরিকদের যেমন একটি পরিচয় পত্র তেমনি এই Card ভারতবর্ষে প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিকদের ভোট দানের সুযোগ প্রদান করে থাকে। ভারত সরকার তথা যে কোন রাজ্য সরকার কর্তৃক প্রদত্ত যে কোন প্রকারের সুযোগ-সুবিধা পেতে গেলে প্রথমত একজন নাগরিকের কাছে এই Voter Card থাকতে হবে। 

ভারতবর্ষে বসবাসকারী সকল নাগরিককে বিনামূল্যে এই Voter Card  প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক ভারতীয় তথা 18 বছরের উর্ধ্বে ভারতবর্ষের সকল নাগরিক এই Voter Card এর জন্য আবেদন করতে পারবে। পূর্বে Voter Card এর  জন্য নূন্যতম বয়স ছিল 21 বছর। তবে 61 তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভোটদাতার নূন্যতম বয়স 21 বছর থেকে কমিয়ে 18 বছর করা হয়েছে। ভারতবর্ষে বসবাসকারী সকল নাগরিককে বিনামূল্যে এই Voter Card প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক ভারতীয় তথা 18 বছরের উর্ধ্বে ভারতবর্ষের সকল নাগরিক এই Voter Card এর জন্য আবেদন করতে পারবে। 

ভোটার কার্ড এর ইতিহাস | History of Voter Card :- 

ভারত বর্ষ স্বাধীন হবার পরে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু। স্বাধীনোত্তর ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষের কোন প্রকার মতামত গ্রহণ করা হয়নি। জাতীয় কংগ্রেসের দলীয় ভোটে জয়ী হয়ে ভারতবর্ষের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন জহরলাল নেহেরু। তবে পরবর্তীতে দেশের শাসনকর্তা তথা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে দেশের সাধারণ মানুষের ইচ্ছা-অনিচ্ছার প্রশ্ন জাগে। দেশের শাসনভার প্রদানের ক্ষেত্রে দেশের সাধারণ মানুষের অধিকারকে নিয়ে নানান বিতর্ক শুরু হয়। পরবর্তীতে 1950 সাল থেকে ভারতবর্ষের শুরু হয় সাধারণ মানুষের ভোট প্রদান। যদিও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে 1957 সালে দ্বিতীয় সাধারণ নির্বাচনের পরেই সাধারণ মানুষের ভোটদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে সমগ্র ভারতবাসীর জন্য ফটো যুক্ত Voter Identity Card চালু করা হয় 1993 সালে। কয়েক দশক পরে 2019 সাল থেকে নতুন ভোটারদের জন্য নতুন এক প্রকার রঙিন ভোটার কার্ড প্রদানের ব্যবস্থা করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন।

ভোটার কার্ড প্রদানের উদ্দেশ্য কী? | (Objective of Voter Card) :- 

  •       ভারতবর্ষের নাগরিকদের একটি সরকারি পরিচয় পত্র প্রদান করা।
  •       প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটদানে অনুমতি দেওয়া ।
  •       দেশের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক উৎসবে সকলের অংশগ্রহণ।
  •       বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তি।
  •       সমগ্র ভারত বর্ষ এবং ভারতবর্ষের বাহিরেও গৃহীত হবে এমন একটি নাগরিকতার পরিচয়।
  •       নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনা।
  •       ভারতবর্ষে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ভারতীয়রাই যেন ভোট দিতে পারে এই বিষয়টি সুনিশ্চিত করা।
  •       নির্বাচন-সংক্রান্ত নানান কারছুপি তথা ছাপ্পা ভোট দূরীকরণ,।

 কারা আবেদন করতে পারবে ভোটার কার্ড এর জন্য (Eligibility for Holding Voter Card):-

নাগরিকতা –

  •       আবেদনকারীকে প্রথমত একজন ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।
  •       আবেদনকারীকে তার পরিবার সহকারে ভারতবর্ষে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে হবে।
  •       আবেদনকারীর পিতা অথবা মাতার Voter Card থাকতে হবে।

আবেদনকারীর বয়স – 1988 সালের পূর্বে ভারতবর্ষে ভোটদানের জন্য যোগ্য নাগরিক এর বয়স ছিল 21 বছর। তবে 1988 সালে 61 তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী ভারতবর্ষে ভোটদানের জন্য নূন্যতম বয়স 21 বছর থেকে পরিবর্তন করে 18 বছর করেন। 1988 সালের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ভারতবর্ষে ভোটদানের জন্য নূন্যতম বয়স সীমা রয়েছে 18 বছর।

Voter Card এর বৈশিষ্ট্য কি (Key Features of Voter Card)?

  •       সুবিধাজনক আকারের জন্য Voter Card গুলি সাধারণ মানুষ খুব সহজেই বহন করতে পারে।
  •       একটি Voter Card এ ব্যক্তির ছবি সহকারে অন্যান্য সমস্ত তথ্য উল্লেখ করা থাকে। এই কার্ডের মাধ্যমে ব্যক্তির পরিচয় খুব সহজেই শনাক্ত করা যায়।
  •       আলাদা আলাদা রাজ্যে বসবাসকারী হলেও সমস্ত ভারতীয়দের Voter Card একই রকম এবং সমান গুরুত্বপূর্ণ।
  •       নির্বাচনের সময়ে সাধারণ মানুষ এই Voter Card এর মাধ্যমে নিজেদের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।
  •       পূর্বে শুধুমাত্র অফলাইন মাধ্যমেই Voter Card এর  জন্য আবেদন করা যেত, তবে বর্তমানে ভারত সরকার একটি অনলাইন পোর্টাল চালু করেছে।
  •       এই পোর্টালের মাধ্যমে উপযুক্ত যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিরা খুব সহজে ঘরে বসেই Voter Card এর জন্য আবেদন করতে পারেন।
  •       এই পদ্ধতিতে কোন সাধারণ মানুষকে সরকারি অফিসের দ্বারস্থ হতে হয় না।

Voter Card এর সুবিধা কি?( Benefits of Voter Card ):-

  •       Voter Card ভারতীয়দের সবচেয়ে বড় নাগরিক পরিচয় পত্র।
  •       Voter Card ভারতবর্ষের সমস্ত নাগরিকদের ভোট দানের সুযোগ প্রদান করে।
  •       ভারতবর্ষে বসবাসকারী যাদের বয়স 18 বছরের উর্ধ্বে তারা সকলেই এই Voter Card এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
  •       বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে এই Voter Card এর প্রয়োজন রয়েছে।

Voter Card এর জন্য কেমন করে আবেদন করবেন? (Voter Card Application Process) :-

Voter Card Online Application Process:- 

  •       নতুন Voter Card এর  আবেদন করার জন্য প্রথমে পশ্চিমবঙ্গের ভোটার সহায়তা বিভাগের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে। হোমপেজ থেকে Form 6 সিলেক্ট করে নিতে হবে।
  •       বাংলা অথবা ইংরেজি যে কোন একটি ভাষাতে ফরমটি পূরণ করা যাবে। নিজেদের সুবিধামতো একটি ভাষা বেছে নিতে হবে।
  •       ইমেইল আইডি অথবা মোবাইল নম্বর দ্বারা পোর্টালে একটি ইউজার অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। পোর্টাল এর তরফ থেকে ইমেইল আইডিতে অথবা মোবাইল নম্বরে একটি মেসেজ প্রদানের মাধ্যমে নম্বরটি যাচাই করে নেওয়া হবে। ইউজার একাউন্ট রেজিস্টার সম্পন্ন হলে তবেই পরবর্তী ধাপে যেতে পারবেন।
  •       এরপরে 6 নম্বর ফরমটি খুলে যাবে, সম্পূর্ণ ফর্ম টি ভালো ভাবে পূরণ করতে হবে।
  •       এরপরে আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের ছবি আপলোড করতে হবে (ছবির সাইজ 350 kb এর মধ্যে হতে হবে)।
  •       এরপরে আবেদনকারীর পরিচয় পত্র এবং যোগ্যতার স্বরূপ আরো কিছু ডকুমেন্টস আপলোড করতে হবে।
  •       সম্পূর্ণ ফর্ম টি একবার ভালোভাবে দেখে নিয়ে ফরমটি সাবমিট করে দিতে হবে।

আবেদন খরার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আবেদনপত্রের যাচাই করণ প্রক্রিয়া শুরু হবে। সমস্ত তথ্য সঠিক থাকলে আবেদন পরবর্তী দুই মাসের মধ্যেই পোস্ট অফিসের মাধ্যমে নতুন Voter Card সরাসরি আবেদনকারীর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে।

Voter Card Offline Application Process:- 

সরকারের তরফ থেকে অনলাইনে Voter পরিষেবা প্রদান এর সুবিধা প্রদান করা হলেও গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষ অফলাইনে আবেদন করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। প্রত্যেক বছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে গ্রামাঞ্চলের প্রত্যেকটি ভোটদান কেন্দ্রের নতুন Voter Card অথবা Voter Card এর বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়। আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় আবেদনপত্র সেই কেন্দ্রে উপলব্ধ করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

  •       প্রথমে নিকটবর্তী নির্বাচনী অফিস থেকে 6 নম্বর ফরম নিতে হবে।
  •       ফরমটি ভালো ভাবে পূরণ করতে হবে, পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি এটাচ করতে হবে।
  •       আবেদনপত্রে যে সমস্ত ডকুমেন্টগুলো জমা করতে বলা হয়েছে সে ডকুমেন্টগুলি একত্রিত করতে হবে।
  •       আবেদনের ফরম এবং সমস্ত সাপোর্টিং ডকুমেন্ট এর সঙ্গে সেই ভোটকেন্দ্রে জমা করতে হবে।
  •       কিছু কিছু ক্ষেত্রে হেয়ারিং এর প্রয়োজন পড়ে, তবে 18 থেকে 25 বছর বয়সীদের জন্য কোন প্রকার হেয়ারিং প্রয়োজন হয় না।
  •       আবেদন করার দুই-তিন মাসের মধ্যে একজন ব্লক অফিসের কর্মী এই Voter Card গুলি প্রত্যেকের কাছে পৌঁছে দেন।

Voter Card এর আবেদন এর জন্য প্রয়োজনীয় Documents (Important Documents for Applying Voter Card ):-

  • একটি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি,
  • পরিচয় পত্র স্বরূপ জন্ম প্রমাণপত্র, কোন পাসপোর্ট, আধার কার্ড, প্যান কার্ড, স্কুল সার্টিফিকেট ইত্যাদি যেকোনো একটি।
  • বাসস্থানের ঠিকানা

Voter Card এর Status জানবেন কিভাবে ( Voter Card Status Checking Process):-

  •     Voter Card এর স্ট্যাটাস জানার জন্য প্রথমে প্রদত্ত লিংকে ক্লিক করুন – “http://ceowestbengal.nic.in/
  •       হোমপেজ থেকে “Search your name in voter list” অপশনে ক্লিক করুন।
  •       জেলা অথবা রাজ্য যেকোনো একটি সিলেক্ট করে নিন,
  •       “Search by” অপশনে NAME অথবা EPIC NO যেকোনো একটিতে ক্লিক করুন।
  •       প্রয়োজনীয় তথ্য গুলি প্রদান করুন এবং একটি ক্যাপচা কোড পূরণ করুন।
  •       এরপরে Search অপশনে ক্লিক করুন।

আপনার পুলিং স্টেশন সম্বন্ধিত তথ্য জানবেন কেমন করে? |  How to Know Your Polling Station:- 

  • প্রথমে Chief Electoral Officer এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে 

“http://ceowestbengal.nic.in/”

  • হোমপেজ থেকে ‘Know Your Polling Station’ লিংকটি বেছে নিতে হবে।
  •  আপনার বাসস্থানের গ্রামের নাম অথবা নিকটবর্তী কোন বড় জায়গার নাম এন্টার করতে হবে। তবে আপনার নিকটবর্তী পোলিং স্টেশন শো করবে।

আপনার Electoral Eetails SMS এর মাধ্যমে জানবেন কীভাবে? 

নিজস্ব ভোটার কার্ডের Electoral Details জানার জন্য মোবাইল থেকে ‘51969’ – এই মোবাইল নম্বরে একটি এসএমএস পাঠাতে হবে। এসএমএসের মধ্যে EPIC No টি অবশ্যই প্রদান করতে হবে। এসএমএস এর ফরমেটটি হবে –

 “WB<space>EPIC NO<space>your Voter Identity Card Number

 বিশেষ দ্রষ্টব্য:- Voter Card সম্বন্ধিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমরা অন্য আর্টিকেল এর মাধ্যমে আলোচনা করবো।

FAQ:-

1. Voter Card এর জন্য আবেদন কোন Website থেকে করা যেতে পারে?
2. নতুন Voter Card এর  আবেদন করার জন্য কত নম্বর ফরম প্রয়োজন ?

ANS: – নতুন Voter Card এর আবেদন করতে গেলে নিকটবর্তী নির্বাচনী কার্যালয় অফিস থেকে 6 নম্বর ফরম নিতে হবে। 

3. Voter Card এর প্রয়োজনীয়তা কি ?

ANS: – প্রধানত ভারতবর্ষের প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটদানে অনুমতি দেওয়ার জন্য এই ভোটার কার্ড প্রদান করা হয়। ভারতবর্ষের যে কোন প্রকারের নির্বাচনের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ যেন তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে তার জন্যই এই ভোটার কার্ড প্রদান।

4. ভারতবর্ষে কবে প্রথম Voter Card  চালু হয় ?

ANS: – স্বাধীনতার পরে ভারতবর্ষের প্রথম 1950 সালে দেশের সমস্ত সাধারণ মানুষকে ভোট দানের অনুমতি দেওয়া হয়। সাধারণ মানুষের দ্বারা মনোনীত প্রার্থী ভারতবর্ষের শাসন ক্ষমতায় বসেন। পরবর্তীতে 1993 সালে প্রথম ছবিযুক্ত ভোটার কার্ড ভারতবর্ষের সকল সাধারণ জনগণের জন্য উপলব্ধ করে ভারত সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *