পশ্চিমবঙ্গের দারিদ্র্যসীমার অন্তর্বর্তী জনগণের জন্য মাসিক পেনশন প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা পশ্চিমবঙ্গে “Jai Bangla Pension Scheme’ নামে পরিচিত। তপশিলি জাতি ভুক্ত প্রবীণ নাগরিকদের এবং তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করার জন্যই মূলত এই Scheme চালু করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রকারের ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে বা জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে সমাজের অন্যান্য বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ এগিয়ে গেলেও, সমাজে পুরোপুরি ভাবে পিছিয়ে রয়েছে তপশিলি সমাজ।
সমাজের অন্যান্য শ্রেণিগুলি তাদের সাধ্যমতো পরিশ্রম করে নিজের এবং পরিবারের সার্বিক উন্নতি সাধন করলেও তপশিলি শ্রেণীর মানুষ এ ব্যাপারে একদমই পিছিয়ে। এর কারণ হলো তপশিলি শ্রেণীর মানুষরা কিছুটা আরাম প্রিয় মানসিকতা বহন করে চলেন। পরিবারের একজন উপার্জনকারী ব্যক্তির ওপর পরিবারের সকলেই নির্ভরশীল থাকে। ফলত তাদের আর্থিক পরিস্থিতির কোনদিনই পরিবর্তন হয় না। এজন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই সমস্ত পরিবারের প্রবীণ নাগরিকদের পেনশন প্রদানের কথা বলেছে। নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে প্রত্যেক মাসে নির্দিষ্ট সময়ে সরাসরি তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রকল্পের টাকা প্রদান করা হয়। এভাবে এই সমস্ত পরিবারগুলি আর্থিক সমস্যা কিছুটা হলেও লাঘব করা।
Jai Bangla Pension Scheme কী ?
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বসবাসকারী তপশিলি শ্রেণীর প্রবীণ নাগরিকদের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার চালু করেছে “West Bengal Jai Bangla Pension Scheme” নামে নতুন একটি Scheme। এই Scheme এর মাধ্যমে সেই সমস্ত প্রান্তিক শ্রেণীর মানুষদের এবং অনগ্রসর শ্রেণির প্রবীণ নাগরিকদের মাসিক পেনশন প্রদান করা হবে। তপশিলি জাতি এবং তপশিলি উপজাতি দুইটি বিভাগের জন্য আলাদা আলাদা দুটি Scheme উন্মোচন করা হয়েছে। এই Scheme গুলিকে একত্রে “Bangla Pension Scheme” এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তপশিলি জাতি বিভাগের জন্য এই Scheme টি চালু করা হয়েছে তার নাম তপশিলি বন্ধু এবং ‘Scheduled Tribe’ সম্প্রদায়ের জন্য যে Scheme চালু করা হয়েছে তার নাম “Jai Johar‘ Scheme ।
Jai Bangla Pension Scheme চালুর উদ্দেশ্য কি ?
Jai Bangla Pension Scheme প্রদানের প্রধান উদ্দেশ্য গুলি –
- কোন প্রকার সরকারি চাকরি করেন না এমন প্রবীণ নাগরিকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়,
- সরাসরি সুবিধাভোগীর ব্যাংক একাউন্টে প্রকল্পের টাকা প্রদান করা হয় যাতে এই টাকা প্রার্থীর প্রয়োজন মেটাতে পারে,
- তপশিলি পরিবারগুলিকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করা,
- নির্দিষ্ট ব্যক্তি বিশেষের দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটানো।
কারা আবেদন করতে পারবে Jai Bangla Pension Scheme এর জন্য :-
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী তপশিলি শ্রেণীর নাগরিক যাদের বয়স 60 বছর পেরিয়ে গেছে তারা সকলে এই Scheme এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। এছাড়াও তপশিলি শ্রেণীর বিধবা মহিলা কিংবা বিশেষভাবে সক্ষম সমস্ত নাগরিক এই Scheme এর জন্য আবেদন করতে পারবে।
Jai Bangla Pension Scheme এর Key Features:-
- এই Scheme এর মাধ্যমে পেনশনের টাকা সরাসরি সুবিধাভোগীর ব্যাংক একাউন্টে প্রদান করা হয়। এই পদ্ধতিতে সরকারি তহবিল থেকে Jai Bangla Pension Scheme”টাকা মঞ্জুর করা হয়ে থাকে এবং সঙ্গে সেই টাকা খুব সহজেই Pension ভোগী রা এই Scheme এর মাধ্যমে প্রাপ্ত রাশি খুব সহজেই তুলতে পারবে।
- এই Scheme এর মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রায় 20 Lakh এর উপর সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন।
- তপশিলি জাতি, তপশিলী উপজাতি, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণী প্রভৃতি সকলেই এই Scheme এর জন্য আবেদন করতে পারবে।
- যে সমস্ত প্রার্থীরা Jai Johar Scheme এর জন্য আবেদন করবেন তারা প্রত্যেক মাসে 1000 টাকা করে পেনশন পাবেন। আর তপশিলি বন্ধু Scheme এর এর অন্তর্গত প্রার্থীরা প্রত্যেক মাসে 500 টাকা করে পেনশন পাবেন।
Jai Bangla Pension Scheme এর Benefits :-
‘Jai Bangla Pension Scheme’ এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন প্রকারের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে যা ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র মহাশয় জানিয়েছেন। দুটি পৃথক Scheme এর মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত নাগরিক কে এই Scheme এর সুবিধা প্রদান করা হবে। পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত তপশিলি শ্রেণীর প্রবীণ নাগরিকদের মাসিক পেনশন পাবেন এই Scheme এর মাধ্যমে।
- Topasali Bandhu Scheme এর অধীনে সমস্ত সুবিধাভোগীরা মাসিক 600 টাকা করে পেনশন পাবেন।
- ‘Jai Johar Scheme এর অধীনে সমস্ত সুবিধাভোগীরা প্রত্যেক মাসে 1000 টাকা করে পেনশন পাবেন।
- পেনশন প্রক্রিয়া চলাকালীন যদি সুবিধাভোগীর মৃত্যু ঘটে তবে উপযুক্ত প্রমান দেখাতে পারলে সুবিধাভোগীর নমিনি প্রাপ্য অবশিষ্ট টাকা গ্রহন করতে পারবেন।
Jai Bangla Pension Scheme এর Eligibility:-
- আবেদনকারীকে প্রথমত একজন ভারতীয় নাগরিক হতে হবে এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- Jai Johar এবং Topasali Bandhu Scheme এর জন্য একজন আবেদনকারীকে অবশ্যই অনগ্রসর শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত হতে হবে।
- আবেদনকারীকে BPL তালিকার অন্তর্ভুক্ত হতে হবে।
- যদি কোন ব্যক্তি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অন্য কোন পেনশন যোজনা সুবিধা পেয়ে থাকেন তবে তারা Jai Bangla Pension Scheme Scheme এর জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
- আবেদনকারীর বয়স 60 বছরের উর্ধ্বে হতে হবে।
Jai Bangla Pension Scheme এর Application Process:-
- আবেদন করার জন্য সর্বপ্রথম ‘Jai Bangla Pension Scheme’ এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে।
- হোমপেজ থেকে “West Bengal Pension Scheme Registration” লিংকে ক্লিক করতে হবে।
- এবারে আবেদনের জন্য একটি ফর্ম আসবে, এই ফরমটি Download করতে হবে এবং Print করে নিতে হবে।
- আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় এই ফরমটি আপনারা নিকটবর্তী ব্লক অফিসে কিংবা পঞ্চায়েত অফিসে অথবা পৌরসভা কার্যালয়ে কিংবা যে কোনো সরকারি অফিসের পেতে পারেন।
- আবেদনকারীর নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, বয়স, জন্মতারিখ, লিঙ্গ প্রকৃতি তথ্যগুলি সঠিকভাবে প্রদান করে এই ফরমটি পূরণ করতে হবে।
- এরপরে ফ্রম এ উল্লেখিত ডকুমেন্টস গুলি সহকারে নিকটবর্তী ব্লক অফিসে বা সমমানের কোন সরকারি অফিসে জমা দিতে হবে (আবেদনের ফরম টি কোন কোন অফিসে জমা করতে পারবেন তা ফর্মে উল্লেখ আছে).।
- পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নব উন্মোচিত Duare Sarkar Scheme এর Camp এ আপনি ফরমটি জমা দিতে পারবেন ।
Jai Bangla Pension Scheme এ আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় Documents:-
- Caste Certificate বা জাতিগত শংসাপত্র,
- Aadhar Card
- Voter Card
- Ration Card
- Residential Certificate
- Family Annual Income Certificate
- Bank Pass Book
- ApplicANT Passport Size Photo
Jai Bangla Pension Scheme এর Selection Process:-
- আবেদনপত্র জমা করার পরে এই আবেদন পত্রগুলি BDO/SDO or Commissioner of KMC (Kolkata Municipal Corporation) প্রভৃতি পদস্থ কর্মচারী দ্বারা যাচাই করা হবে। সংশ্লিষ্ট অফিসাররা আবেদনকারীদের যোগ্যতা বিচার করবেন।
- এই সমস্ত ব্লক স্তরের অফিসাররা এবং মিউনিসিপালিটি কর্মচারীরা আবেদনপত্র গুলি ডিজিটালাইজ করবেন এবং পোর্টালে তথ্য আপলোড করবেন।
- সমস্ত যোগ্যতা যাচাই করার পরে উপযুক্ত ব্যক্তিদের নাম জেলাশাসকের অফিসে পাঠানো হবে।
- সংশ্লিষ্ট জেলার District Magistrate এই তথ্যগুলিকে হঠাৎ উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের নাম সরাসরি Nodal Department এর কাছে প্রেরণ করবেন।
- Nodal Department এই পেনশন মঞ্জুর করবেন।
- এরপরে WBIFMS লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত প্রার্থীদের ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি পেনশনের টাকা প্রদান করা হবে।
- প্রত্যেক মাসের প্রথম দিনেই পেনশনের টাকা প্রত্যেকের ব্যাংক একাউন্টে প্রদান করা হবে।
Jai Bangla Pension Scheme সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় :-
- Jai Bangla Pension Scheme Topasali Bandhu এবং Jai Johar নামে 2 টি বিভাগে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়েছে।
- Topasali Bandhu Scheme এর অধীনে সমস্ত সুবিধাভোগীরা মাসিক 600 টাকা করে পেনশন পাবেন।
- Jai Johar Scheme এর অধীনে সমস্ত সুবিধাভোগীরা প্রত্যেক মাসে 1000 টাকা করে পেনশন পাবেন।
- রাজ্যের একটি গবেষণা সভায় এই কথাটি উঠে এসেছে যে এই Scheme এর মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় 20 Lakh এর ও বেশি মানুষের উপকৃত হবেন।
- বিধবা কিংবা বিশেষভাবে সক্ষম প্রার্থীরাও এই Scheme এর জন্য আবেদন করতে পারবে
- Scheme এর জন্য প্রয়োজনীয় আবেদনপত্র Online এবং Offline উভয় ভাবেই পাওয়া গেলেও পূরণ করার পরে আবেদনপত্রটি Offline এই জমা করতে হবে।
Jai Bangla Pension Scheme Status Checking Process কি ?
- সর্বপ্রথম ভিজিট করুন Jai Bangla Pension Scheme এর Official Portal (https://jaibangla.wb.gov.in/login) আপনাদের সুবিধার্থে সঙ্গে আমরা অফিশিয়াল ওয়েবসাইট লিংক প্রদান করেছি।
- প্রদান করুন আপনার Register করা Mobile Number এবং Captcha Code টি প্রদান করে Generate OTP Option এ ক্লিক করুন।
- এখন প্রদান করুন প্রাপ্ত OTP
- এখন আপনার স্ক্রিনে দেখাবে আপনার Application Status।
Jai Bangla Pension Scheme Important Links:-
Jai Bangla Pension Scheme Application Form Download | Click Here |
Official Site | Click Here |
FAQ:-
1. Jai Johar Pension List Check করবেন কিভাবে?
ANS:- উপরে প্রদান করা Status Checking Process টি ফলো করুন।
2. www.jaibangla.wb.gov.in/ Online Application কি সম্ভব?
ANS:- না।
3. Jai Bangla Pension Scheme Application Form Download করবো কিভাবে?
ANS:- Download Section এ আমরা প্রদান করেছি Application Form Download Link। ক্লিক করে Application Form টি Download করতে পারবেন।